
হেলথ হাইপ ডেস্কঃ
মানুষের জীবনে গড়ে ২.৫ বিলিয়ন বার শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গে লক্ষ লক্ষ গ্যালন রক্ত পাম্প করা হার্টের সুস্থতা তো বজায় রাখতেই হবে। এই অবচ্ছিন্ন প্রবাহই অক্সিজেনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান আমাদের শরীরের ক্ষুদ্রতম কোষগুলো পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। এই হার্ট ভালো আছে কিনা তা জানতে ডাক্তার কিছু সাধারণ পরীক্ষা করবেন। তারা আপনার হৃদস্পন্দন শুনবেন, হার্টবিট পরীক্ষা করবেন ও রক্তচাপ পরিমাপ করবেন। আপনার রক্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজনও হতে পারে।
হার্টরেট
এক মিনিটে হার্ট কতবার স্পন্দিত হয় সেই সংখ্যাকে হার্টরেট বলে। ডাক্তার আপনার নাড়ি পরীক্ষা করবেন হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক আছে কিনা তা দেখার জন্য। নাড়ি পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যায় শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত প্রবাহের প্রবলতা কতটুকু। নাড়ি পরীক্ষা করার পাশাপাশি ডাক্তাররা স্টেথস্কোপ ব্যবহার করেন হার্টের ভাল্বগুলো খোলা এবং বন্ধ হওয়ার শব্দ শোনার জন্য। আপনি নিজেও নাড়ি পরীক্ষা করতে পারেন। একটি স্টপওয়াচ অন করুন। হাতের তর্জনী এবং হাতের মধ্যম আঙুলটি অন্য হাতের ভেতরের দিকে কব্জিতে থাম্বের ঠিক নীচে রাখুন। আপনার আঙ্গুলে ট্যাপিং বা পালস অনুভব করবেন। 10 সেকেন্ডের মধ্যে আপনি যতগুলো পালস অনুভব করেছেন তা গণনা করে 1 মিনিটের জন্য হার্টরেট খুঁজে পেতে সেই সংখ্যাটি 6 দিয়ে গুণ করুন।
রক্তচাপ পরীক্ষা
রক্তচাপ হ’ল হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করার ফলে ধমনীর প্রাচীরে রক্তের প্রয়োগকৃত চাপ। এটি পরিমাপ করার দুটি উপায় রয়েছে: ১।সিস্টোলিক রক্তচাপ; হৃদপিণ্ড সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ার সময় ধমনীতে যে চাপ পড়ে ২।ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ; হৃদস্পন্দনের সময় হার্ট যখন প্রসারিত হয় তখন রক্তের চাপ। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যখন বিশ্রামে থাকেন তার জন্য সাধারণ রক্তচাপ ১২০/৮০। রক্তচাপ ১৩০/৮০ বা তারও বেশি হলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনও বলা হয় । দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে প্রাচীর শক্ত এবং সংকীর্ণ হয়ে যেতে পারে যা হার্টে রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। এটি হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকেরও কারণ হতে পারে। রক্তচাপ মানুষের বয়স, হার্টের অবস্থা, আবেগ-উত্তেজনা, কাজকর্ম এবং সেবন করা ওষুধের উপর নির্ভর করে উচ্চ ও নিম্ন হতে পারে। কোনো কারণে একবার উচ্চ রক্তচাপের রিডিং দেখালেই এটি মনে করার কারণ দরকার নেই যে আপনার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। বরং বিভিন্ন সময় যখন বিশ্রাম নিবেন তখন ব্লাড প্রেশার পরিমাপ করবেন।
রক্ত পরীক্ষা
ডাক্তার রক্তে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, অ্যালবুমিন এবং ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ পরীক্ষা করার জন্য রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন। ফলাফলে অস্বাভাবিক পরিমাণ আসলে তা কিডনি, লিভার ও হার্টের সমস্যার সম্ভাব্য লক্ষণ। রক্তে কোলেস্টরল পরীক্ষার মাধ্যমে এলডিএল বা “খারাপ” কোলেস্টেরল এবং এইচডিএল বা “ভাল” কোলেস্টেরলের মাত্রা জানা যায়। এছাড়া শরীরের অন্যান্য সমস্যা যা আপনার হার্টকে প্রভাবিত করতে পারে যেমন রক্তস্বল্পতা বা থাইরয়েড কি অবস্থায় আছে তা নির্ণয়ে সহায়তা করে ।
ওয়েবএমডি থেকে অনুদিত; অনুবাদঃ জারিন তাহসিন আনজুম