
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহনের মাধ্যমে আপনি ঝুঁকি কমাতে পারেন
Bottom of Form
বিগত তিন দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক হারে স্থুলতা বেড়ে যাওয়ায় নন-এলকোহলিক ফ্যটি লিভার ডিজিসে অথবা এনএএফএলডির প্রবণতা বাড়ছে। শিল্পন্নোত দেশগুলোর ২০-৪০% মানুষ কোন ধরনের ফ্যটি লিভার ডিজিসে ভুগছেন এবং বয়সের সাথে সাথে এ রোগটির বিস্তার লাভের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।
৮০’র দশকের প্রথম দিকে এটি একটি রোগ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এবং পুরো চিকিৎসক সমাজকে নন-এলকোহলিক ফ্যটি লিভার ডিজিস বিভ্রান্তিতে ফেলে দেয়। যারা ডায়াবেটিস এবং স্থলতায় ভুগছেন তাদের যকৃতের আকার বড় হয় এবং যকৃতের এনজাইম বেশী থাকে যা মদ্যপান করেন এমন ব্যাক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। তবে, এদের বেশীরভাগ জানিয়েছেন যে তারা অতিরিক্ত মদ্যপান করেননি।
যকৃতের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারনা
যকৃৎ আপনার পেটের গহবরের সর্ববৃহৎ অঙ্গ। এটি অনেক ধরনের কাজ করে থাকে যেগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
- আপনি যা কিছু খেয়ে থাকেন ও পান করেন এগুলো কে প্রক্রিয়া করে
- আপনার রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে আনে
- সংক্রমনের সাথে লড়াই করে
- রক্তে চিনির পরিমান নিয়ন্ত্রন করে
- হরমোন এবং প্রোটিন উৎপাদনে সহায়তা করে
উপসর্গসমূহ
সাধারণত যকৃতের ওজন হয়ে থাকে তিন পাউন্ড। যখন আপনার যকৃতের ৫-১০% ভাগের বেশী অংশে চর্বি থাকে তখন আপনার “ফ্যটি লিভার’ রয়েছে বলে বলা যায়। যদিও কারো কারো ক্ষেত্রে যকৃতের এই অতিরিক্ত চর্বি (যাকে বলা হয় স্টিয়াটোসিস) কোন সমস্যা করে না তবে কখনো কখনো এর কারনে যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। এই রোগের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
- ক্লান্ত বোধ করা
- বমি বমি বোধ করা
- পেট ব্যথা
- হলুদ ত্বক অথবা চোখ (যেমন জন্ডিসে হয়ে থাকে)
এডভান্সড নন-এলকোহলিক ফ্যটি লিভার ডিজিসের অন্যতম লক্ষন হলো শরীরে দাগ পড়া। এর কারনে সিরহোসিস হতে পারে। আপনার যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আপনার শরীর এটি মেরামতের জন্য কোল্লাজেন নিঃসরণ করে। ফাইব্রোসিস অথবা আপনার যকৃৎ ভারী হয়ে থাকলে যকৃতের কোষগুলো তখন মেরামত হয়ে যায়।
নন-এলকোহলিক ফ্যটি লিভার ডিজিসের ক্ষেত্রে প্রায় ১০% রোগীর অবস্থা পরের ১০ বছরে জটিল আকার ধারন করে যা এনএএসএইচ অথবা নন এলকোহলিক স্টিয়াটোহেপাটাইটিস নামে পরিচিত। এনএএসএইচের কারনেঃ
- সিরহোসিস অথবা যকৃৎ শক্ত হয়ে যেতে পারে
- লিভার অকার্যকর হতে পারে
- লিভার ক্যান্সার হতে পারে
- মৃত্যু হতে পারে
রোগ নির্ণয়
নন-এলকোহলিক ফ্যটি লিভার ডিজিসের চিকিৎসায় প্রথম ধাপ হচ্ছে এটি নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা। আপনার চিকিৎসক ফ্যটি লিভার বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছেঃ
- পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যে যকৃতের এনজাইমগুলো অতি মাত্রায় রয়েছে কিনা
- আপনার যকৃতের আকার বৃদ্ধি হয়েছে কিনা তা আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে পরীক্ষা করা
- আপনার কি এনএএসএইচ এ আক্রান্ত নাকি সাধারন ফ্যটি লিভারে আক্রান্ত তা যকৃতের বায়োপসির মাধ্যমে পরীক্ষা করা
ঝুঁকিসমূহ
যদিও এনএএফএলডির সঠিক কারনগুলো এখনও জানা যায়নি তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পূর্বে থেকে বিরাজমান কিছু রোগ ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছেঃ
- স্থলতা
- টাইপ ২ ডায়াবেটিস
- যদি মেটাবোলিক সিনড্রোম হয়ে থাকে
এনএএফএলডির জটিলতা স্থলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়তে থাকে এবং পেটে জমা হওয়া মেদ বিপদজনক এনএএসএইচের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে পারে এমনকি সে সকল ব্যাক্তিদের খেত্রেও যাদের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) স্বাভাবিক থাকে।
কী ধরনের খাবার খাবেন
এনএএফএলডির আরম্ভ, বিস্তার এবং চিকিৎসা কিছুটা নির্ভর করে আপনি কী খাচ্ছেন এবং কী ধরনের পুষ্টি পাচ্ছেন তার উপর। যে সকল খাবার গ্রহন করলে আপনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
- অধিক ক্যলোরি সমৃদ্ধ খাবার
- হাইড্রোজেনাটেড অয়েল (ট্রান্স ফ্যট) সমৃদ্ধ খাবার
- প্রানী হতে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহন করলে যার ফলে স্যচুরেটেড ফ্যট এবং কোলেস্টেরোল অধিক মাত্রায় গ্রহন করা হয়
- অধিক মাত্রায় ফ্রকটোজ কর্ণ সিরাপ সমৃদ্ধ পানীয় পান করলে
যেভাবে এনএএফএলডির ঝুঁকি হ্রাস করতে পারেন তার মধ্যে রয়েছেঃ
- সল্প মাত্রায় ক্যলোরী গ্রহন করে
- মাংস এবং পনিরের পরিবর্তে সবজী থেকে প্রোটিন গ্রহন করে
- আপনার শরীরের ৩ থেকে ১০ শতাংশ ওজন কমানোর মাধ্যমে
- আপনার খাদ্যাভ্যাসে আঁশ, গ্রিন টি এবং কফি অন্তর্ভুক্ত করে