
- অন্ত্রে গ্যাসজনিত সমস্যাসমূহ নতুন নয় এবং নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে আপনি যদি গ্যাসট্রোএসোফেগাল রিফলাক্স ডিজিজে (জিইআরডি) ভুগে থাকেন তবে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে এই রোগের উপসর্গ থেকে পরিত্রান পেতে পারেন।
- নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং মেডিটেরিয়ানিয়ান খাবার জিইআরডির উপসর্গ বৃদ্ধির জন্য দায়ী আপনার পাকস্থলীর এসিড ভালোভাবে পরিষ্কার করবে।
অনেককেই তাদের জীবনে অন্ত্রে গ্যাস জনিত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আপনার যদি বুকজ্বালা পোড়ার সমস্যা থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে সঠিক খাবার গ্রহন সত্ত্বেও আপনার উপশম না হতে পারে। জেএএমএ ইন্টারনাল মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা যায় যে জীবন যাপনের আচারে পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হতে পারেন।
নার্সেস হেলথ স্টাডি ২ থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে বুকজ্বালা এবং/অথবা এসিড রিফলাক্সের চিকিৎসা নির্ণয়ে গবেষকরা জিইআরডির উপসর্গগুলোকে অন্যান্য বিষয়গুলোর যেমনঃ শারীরিক পরিশ্রম, বডি মাস ইন্ডেক্স, ধূমপান, ঔষধের ব্যাবহার, খাদ্যাভাস এবং চিকিৎসার সাথে তুলনা করেন।
গবেষকরা দেখতে পান পাঁচটি বিষয় এই রোগের উপসর্গ উল্ল্যেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে সম্ভব। এগুলো হচ্ছেঃ শরীরের স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখা, কখনোই ধূমপান না করা, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মধ্যম থেকে তীব্র শারীরিক পরিশ্রম করা, যেসব পানীয়তে এসিড রয়েছে যেমনঃ কফি, চা এগুলো প্রতিদিন দুই কাপের বেশী না খাওয়া এবং একটি সমীচীন খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা (এ জাতীয় খাদ্যগুলো মেডিটারিনিয়ান খাদ্যাভ্যাসের মতন যেখানে ফল, সবজি, আস্ত শস্যদানা, অল্প ননীযুক্ত দুগ্ধ খাবার, মাছ ও মুরগীর উপর গুরুত্বআরোপ করা হয়ে থাকে।)
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মেডিসিনের অধ্যাপক এন্ড্রিউ চ্যান এমডি বলেন একজন অংশগ্রহনকারী যতগুলো আচার আচরন মেনে চলবেন তার জিইআরডি উপসর্গের ঝুঁকি ততোটাই কম। তিনি বলেন যে পাঁচটি গাইডলাইন মেনে চলবেন তার ক্ষেত্রে উপসর্গ প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায় এবং তার যদি বুকজ্বালার বিহিত চিকিৎসা নিয়ে থাকেন তবে উপসর্গ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আরো বেড়ে যায়।
ডাঃ চ্যান বলেন, যদিও জিইআরডি নিয়ন্ত্রনে খাবারের ভুমিকাই প্রধান বলে মনে হয় তবে, এক্ষেত্রে শারীরিক পরিশ্রমের ভূমিকাও কম নয়।
তিনি বলেন “রিফ্লাক্সের উপসর্গ কমাতে শারীরিক পরিশ্রমের ভূমিকায় আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি এবং এটি শারীরিক পরিশ্রমের কার্যকারিতা নিরীক্ষায় গবেষণাগুলোর মধ্যে প্রথম।“
ডাঃ চ্যান আরো বলেন প্রতিদিন অধিক পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রম পাকস্থলীর এসিড পরিষ্কার করতে এবং হজমে সহায়তা করে যার কারনে খাদ্যনালীতে এসিড ফিরে আসার প্রবণতা কমে যায়।
যদিও গবেষণায় অংশ নেয়া সবাই নারী ছিলেন কিন্তু ডাঃ চ্যান বলেন উপরোক্ত বিষয়গুলো পুরুষদের জন্য এবং বয়স্ক ও তরুনদের জন্যও প্রযোজ্য কেনোনা প্রক্রিয়াটি সবার ক্ষেত্রেই একরকম। আপনি যত চলাফেরা করবেন আপনি আপনার হজমতন্ত্রের সুবিধা কাজে লাগাতে পারবেন।
পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা যায় জিইআরডি অন্ত্রের গ্যাসজনিত রোগগুলির মধ্যে অন্যতম এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ এই রোগে ভুগে থাকেন। যদিও গবেষকরা মনে করেন যে উপরোক্ত সংখ্যা বাস্তবে অনেকগুন বেশী কেনোনা বেশীরভাগ জিইআরডি রোগী ডাক্তারের পরামর্শ নেন না বরং বেশীরভাগ মানুষ উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রনের জন্য এন্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করে থাকেন।
ডাঃ চ্যান বলেন, এসব ঔষধ মাঝে মাঝে সেবন করলে অসুবিধা নেই কিন্তু আপনি যদি এসব ঔষধ নিয়মিত সেবন করেন তবে তা নাও ভালো হতে পারে।
তিনি বলেন “ঔষধ বেশীরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে কার্যকর হলে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের মত এসব ঔষধের দীর্ঘমেয়াদী ব্যাবহারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দুশ্চিন্তার কারন হতে পারে। এ গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসক এবং রোগীরা ঔষধের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমিয়ে খাবার এবং জীবন আচারের পরিবর্তনের সুযোগ করে দিবে”।